ঢাকা , শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫ , ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

চট্টগ্রামে প্রায় ৫০ হাজার গ্যাস রাইজার ঝুঁকিমুক্ত করা হয়নি

আপলোড সময় : ০১-০৬-২০২৪ ০৯:৪২:০৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট সময় : ০১-০৬-২০২৪ ১১:১৮:৫৬ পূর্বাহ্ন
চট্টগ্রামে প্রায় ৫০ হাজার গ্যাস রাইজার ঝুঁকিমুক্ত করা হয়নি সংগৃহীত
চট্টগ্রামে মাটির নিচে স্থাপিত গ্যাস বিতরণ পাইপলাইনে প্রায় সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। প্রায় ৪০ বছর আগে এসব বিতরণ পাইপলাইন বসানো হয়েছিল। পাইপ ক্ষয় হয়ে এবং নগরীতে বিভিন্ন সময়ে পিডিবি, ওয়াসা, টিঅ্যান্ডটির ও উন্নয়ন কাজে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে মাটির নিচে থাকা বিতরণ পাইপলাইনের বিভিন্ন স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

১ লাখ ৫ হাজার গ্যাস রাইজার জরিপ করে চিহ্নিত ত্রুটি মেরামত করা হলেও প্রায় ৫০ হাজার গ্যাস রাইজার ঝুঁকিমুক্ত কি না, এখনো জরিপ করা হয়নি। দুর্ঘটনা এড়াতে পুরাতন এসব পাইপলাইন ও রাইজার পরিবর্তন জরুরি হয়ে পড়েছে। কোম্পানির কর্মকর্তারা জানান, বিতরণ পাইপলাইনের কোথাও ছিদ্র বা ত্রুটি আছে কি না, চিহ্নিতকরণের উদ্যোগ চলছে।

জানতে চাইলে কেজিডিসিএলের মহাব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসেস) প্রকৌশলী মোহাম্মদ আজম খান বলেন, ‘বিতরণ পাইপলাইনের ৫০ বছরের কার্যক্ষমতা সময় রয়েছে। এসব পাইপলাইন খুবই উন্নতমানের। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সংস্থার খোঁড়াখুঁড়ির কারণে পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যে অনেক জায়গায় ত্রুটি মেরামত করেছি। কোম্পানির নেটওয়ার্কের একটি অংশ ’৯০ সালের পরে স্থাপন করা হয়েছে।’

সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ শুরু হয় ১৯৮৪ সালের দিকে। প্রথম পর্যায়ে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির মাধ্যমে চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ কার্যক্রম শুরু হয়। তখনই চট্টগ্রামে মাটির নিচে গ্যাসের বিরতণ নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়। এর মধ্যে এসব বিতরণ পাইপলাইন পরিবর্তন করা হয়নি।

বর্তমানে চট্টগ্রামে ৬ লক্ষাধিক গ্রাহক রয়েছে। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কিলোমিটার বিতরণ পাইপলাইন রয়েছে। এসব পাইপলাইন ২ ইঞ্চি থেকে ১০ ইঞ্চি পর্যন্ত রয়েছে। এছাড়া কোম্পানির আওতায় ১৮৬ কিলোমিটার উচ্চচাপসম্পন্ন গ্যাস পাইপলাইন রয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১৬ ইঞ্চি, ২০ ইঞ্চি ও ২৪ ইঞ্চি ব্যাসের রিং মেইন লাইন, ২০ ইঞ্চি ব্যাসের ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রাউজান তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র পাইপলাইন, ৮ ইঞ্চি ব্যাসের ১৮ কিলোমিটার কেপিএম স্পারলাইন, ১০ ইঞ্চি ব্যাসের ৫৬ কিলোমিটার সেমুতাং গ্যাস পাইপলাইন, ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ২২ কিলোমিটার আনোয়ারা শিকলবাহা তাপবিদ্যুত্ কেন্দ্র ও আনোয়ারা কাফকো সিইউএফএল পাইপলাইন এবং ১৬ ইঞ্চি ব্যাসের ১৫ কিলোমিটার বড়তাকিয়া মীরসরাই পাইপলাইন।

সংশ্লিষ্টরা জানান, চট্টগ্রামে কোনো মাস্টারপ্ল্যান্ট অনুসরণ করে গ্যাস, বিদ্যু, পানি ও টিঅ্যান্ডটির লাইন স্থাপন করা হয়নি। সংস্থাগুলো যার যার সুবিধামতো বিতরণ নেটওয়ার্ক স্থাপন করেছে। গ্যাস বিতরণ লাইনের ওপর বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার লাইন স্থাপন ও উন্নয়নকাজে খোঁড়াখুঁড়ির কারণে গ্যাস বিতরণ পাইপলাইন ফেটে গেছে। পাইপলাইনে ছিদ্র হয়ে গ্যাস বের হয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে। ইতিপূর্বে নগরীতে কয়েক স্থানে গ্যাস দুর্ঘটনায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে নগরীতে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজ চলছে।

এই কাজ করতে গিয়ে অনেক জায়গায় পাইপলাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবার পাইপলাইন সরাতে হয়েছে। কোম্পানির আওতায় প্রায় দেড় লাখ গ্যাস রাইজার রয়েছে। গত ২০২১-২২ অর্থবছরে মোবাইল গ্যাস লিক ডিটেকশন সিস্টেমের মাধ্যমে আবাসিক ও বাণিজ্যিক গ্রাহক পর্যায়ে ১ লাখ ৫ হাজার গ্যাস রাইজার সার্ভে করে প্রায় ৮ হাজার ২৪০টি রাইজারে লিকেজ শনাক্ত হয়। পরবর্তী সময়ে চিহ্নিত এসব গ্যাস রাইজার মেরামত করা হয়। কিন্তু বাকি প্রায় ৪৫ হাজার গ্যাস রাইজার এখনো সার্ভে করে লিকেজ চিহ্নিত করা হয়নি। এতে সব রাইজার দুর্ঘটনার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।­

নিউজটি আপডেট করেছেন : Monir Hossain

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ